Wednesday, July 17, 2019

ভয়ংকর রাত


 ভয়ংকর রাত



part-1,2


সেমিষ্টার ব্রেক আর কয়দিন পর থেকে।
ক্যাম্পাস থেকে বাসভ্রমণ এর জন্য,
রুহুল স্যার সেদিন ক্লাস রুমে এসে বলল..
—ডেয়ার স্টুডেন্টস,তোমরা তো সবাই জানো,প্রতিবছরই আমাদের এই কলেজ থেকে বার্ষিক শিক্ষা ভ্রমনের জন্য বাস ছাড়া হয়।
তো এবছর ও প্রতিবারের মত বাস ছাড়া হবে।
স্থান,রাঙ্গামাটি।
সবার কথা বিবেচনা করে জন প্রতেক ১০০০ টাকা করে ফি ধার্য করা হইছে।
আগামী একসপ্তাহের ভিতরে যারা যারা যেতে ইচ্ছুক অফিস রুমে স্টাফ 'কলিমুদ্দিনের নিকট জমা দিয়ে দিবে।
বলেই স্যার রুমে থেকে চলে গেলো।
এদিকে স্যার চলে যাওয়ার সাথে সাথে রাহুল আমার কাছে এসে বসলো।তারপর পিঠ চাপড়ায়ে বলল।
—দোস্ত স্যারদের সাথে গিয়ে কোনো মজা নেই।সেখানে গিয়েও তাদের কড়া শাসনের ভিতরে থাকতে হয়।এখানে যাবে না,ওখানে ঢুকবে না।
আর তা ছাড়া রাঙ্গামাটি তো তেমন শিক্ষনীয় কোনো স্পট নই।তার থেকে আমরা কয়েকজন মিলে চল আমাদের গ্রামের বাড়ি থেকে ঘুরে আসি।
সেখানে গেলে অনেক আনন্দ হবে।আর তোরা তো কেউ গ্রাম দেখিস নি কখনো।
রাহুলের আইডিয়াটা একবারে মন্দ নই।
কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর,রাহুলের দিকে তাকিয়ে বললাম।
—তো কে কে যাবি?
—তোকে ধরে মোট পাঁচজন হচ্ছি আমরা।
রাজু,সোহেল,রাফি,আমি আর তুই।
—সবাই কি যাবে?
রাহুল বেশ চাঞ্চল্যতার সাথে জবাব দিলো।
—যাবে না মানে,যেতেই হবে।
শুধু তুই একবার হ্যাঁ বল।
পাঠ্যবইতে পড়েছি গ্রামের সৌন্দর্য নাকি অনেক মনোমুগ্ধকর ।
আর রাহুল তো ওর গ্রামের প্রসংসা করেই শেষ করতে পারে না।তাই আমিও সাতপাঁচ না ভেবে হ্যাঁ বলে দিলাম।
রাহুল আমার সম্মতি পেয়ে খুশিতে একলাফ দিয়ে উঠে বলল..
—দোস্ত তাহলে দেরি না করে চল পরশু আমাদের যাত্রা শুরু করি।
—পরশু কেন? আগামীকালকে ভোরের গাড়ি ধরে রওনা দিবো।
কতঘন্টা লাগে তোর গ্রামে পৌঁছাতে।
—ঢাকা থেকে প্রাই ৮ ঘন্টার মত লাগে,যদি জ্যামে আটকা না পড়ি তাহলে।
রাহুলের কথা শুনে কিছুটা অবাক হয়ে বললাম।
—এতো দুরের পথ!এতো দুরে থাকিস তুই?
রাহুল মন খারাপ করে বলল..
—হ্যাঁ রে দোস্ত।অনেক দুর থেকে এসে তোদের মত এমন বন্ধু পেয়েছি।তোরা না থাকলে যে আমার কি হতো।
রাহুল গ্রামের ছেলে হওয়াতে একটু বেশিই ইমোশনাল।এই তো মাস কয়েক আগে তার গ্রালফ্রেন্ডর সাথে ব্রেকআপ হওয়াতে কি কান্ডটায় না করলো।
তিনবছর হলো একসাথে ডিপ্লোমা করছি।
আমার বাসা ঢাকাতে হলেও বন্ধুদের সাথে থাকার মজা না হারানোর জন্য বাসা ছেড়ে বন্ধুদের সাথে ম্যাচ সেয়ার করে থাকি।
আমারা পাঁচ বন্ধু পাঁচ এলাকার।
যাকে বলে পাঁচমিশালি বন্ধুত্ব।
তবে পাঁচজন ভিন্ন ভিন্ন এলাকার হওয়া সত্বেও একেঅপরের প্রতি খুবই কেয়ারিং আমরা।
রাহুলের সাথে কথা বলার মাঝখানে,
হুট করে রাজু,আর সোহেল এসে দাঁড়ালো।
ওরা দুইজন নোওয়াখালি আর বরিশালের।
আর রাফি হলো রাজশাহীর।
সুযোগ পেলে কেউ কাউকে তার এলাকা নিয়ে পচাতে ছাড়ি না।
তবে রাজু নোওয়াখালির হওয়াতে ওরে একটু বেশি অত্যাচার সহ্য করতে হয়।
অবশ্য আমাদেরকেউ কম অত্যাচারের স্বীকার হতে হয় নি।
প্রথম প্রথম রাজুর আঞ্চলিক ভাষার কথা সবার মাথার উপর দিয়ে যেতো আমাদের।
ধিরে ধিরে অভ্যস্ত হয়ে গেছি এখন।
আমাদের কথা বলা দেখে রাজু এসে বললো..
—কিরে কি গল্প করছিস,কোনো নতুন মেয়ে পটাইছোস নাকি মামা।
রাজুর কথার উত্তরে রাহুল বলে উঠলো।
—তোরা নোওয়াখালিরা সত্যি হারামি।সারাক্ষণ কুমতলব ছাড়া কি কিচ্ছু মাথাতে আসে না।
রাজু হেসে বললো..
—আরে দোস্ত চেতো কেন?
কি কথা বলছিলা,বলো আমারাও একটু শুনি।
রাহুল,রাজুর কথামত আবার প্রসঙ্গে ফিরে এসে বলল..
—ভাবছি এবার কলেজট্যুর বাদ দিয়ে,আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে আমাদের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাবো।সেখানে গিয়ে আমার পুরো গ্রামটা ঘুরে ঘুরে দেখবি তোরা।একবার গেলে আর আসতেই চাইবি না তখন।
রাজু মাথাচুলকিয়ে উত্তর দিলো..
—বুদ্ধিটা খারাপ না,তবে কে কে যাবি?
রাহুল বলল।—আমি,তুই,আশিক,সোহেল আর রাফি।
—হুম,,যাওয়া যেতে পারে।
তো কবে যাবি?
—আশিক বলছে,আগামীকাল ভোরের দিকে রওনা দিবো।
তোরা কি বলিস?
এতক্ষণ ধরে আমাদের ভিতরে হওয়া কথা গুলো চুপচাপ শুনে যাওয়া আমাদের সবথেকে ভদ্র ছেলেটি, সোহেল বলে উঠলো..
—দোস্ত আমার বাবায় কিন্তু শুনলে আমারে যাইতে দিবো না।
সোহেলের কথা শুনে রাজু ঘাড়ে হাত দিয়ে বললো..
—এখানেও তোর বজ্জাত বাবা,তোর বাবাটা সত্যি একটা আস্তো খাটাস।
এবার এসে কি অবস্থাটা না করেছিলো আমার।এই শীতের ভিতরেও তোর বাবার জন্য রোজ গোসল করতে হইছে আমাকে।
—দেখ নোওয়াখাইল্লা আমার বাবাকে নিয়ে কোনো কথা বলবি না।
বাবা যা করছে একদম ঠিক করছে।
দু সপ্তাহ গোসল না করে কেউ থাকতে পারে।
—দেখ সোহেল আমার দেশের বাড়ি নিয়ে খোঁটা দিবি না।
আচ্ছা তোরা থামবি,
দুজনকে থামিয়ে বললাম..
-আরে আমরা কি তোর বাবাকে বলতে যাবো নাকি?তোর বাবায় জানবে আমরা কলেজে আছি।আর কলেজ থেকে তো এমনিতেও ট্যুরে যাচ্ছেই।
রাজু পাশে থেকে আবার বলে উঠলো।—সবাই মিলে চিল্ হবে মামা চিল্।
বলেই সবাই একসাথে লাফিয়ে উঠলাম।
সবাইকে থামিয়ে বললাম..
—একটাবার রাফিকে ফোন করে জেনে নে।ও আবার যেতে পারবে কি না।
—কেন যেতে পারবে না।আমরা সবাই যাচ্ছি,ও কেন যেতে পারবে না।
বলেই রাজু রাফিকে ফোন দিলো।
এই রাফি আমরা সবাই মিলে রাহুলের গ্রামের বাড়ি ঘুরতে যাচ্ছি আগামীকাল ভোরে।
তোরে-ও যেতে হবে।
রাজু কিছুক্ষণ কথা বলে একপ্রকার বিরক্ত নিয়ে ফোনটা কেটে দিয়ে বলল..
—সালা ভিতুর ডিম।গ্রালফ্রেন্ড তো আমাদেরও আছে।সবকিছু গ্রালফেন্ড কে বলে করতে হবে কেন?ওর গ্রালফ্রেন্ডের অনুমতি দিলে যাবে।
রাজুর কথা শুনে বুঝতে পারলাম।
রাফি তার গ্রালফেন্ডের অনুমতি ছাড়া যেতে পারবে না।
ব্যাটা আস্ত গভেট একটা।তা না হলে কেউ গ্রালফেন্ডের আঁচল ধরে বসে থাকে।
—আচ্ছা রাতে ওরে বুঝায়ে বলবো,সবাই গেলে ও একা একা থাকবে কেন?
চল এখন ম্যাচে যাই,কাপড়-চোপড় গুছিয়ে রাখতে হবে তো আবার।
বলেই চারজন মিলে ম্যাচের পথে রওনা দিলাম।
রাতে রাফিকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করালাম।
তারমানে ভোররাতে আমাদের যাত্রা শুরু হবে।ফাগুনের এই ১ম দিন গুলা গ্রামের মনোমুগ্ধকর পরিবেশে কাটাবো।
ভাবতেই মনে অজানা সুখ হাতছানি দিয়ে গেলো।]
.. ..
রাতে সবাই নিজ নিজ ব্যাগপত্র গুছিয়ে রেখে দিলাম।কারণ ভোরের ট্রেণ ধরে আমরা রাহুলের গ্রামের বাড়িতে রওনা দিবো।
রাজুকে ভোর ৬ টার সময় এলার্ম দিয়ে রাখতে বলে সকাল করে সবাই ঘুমাতে গেলাম।
কিন্তু পরদিন সকালে চোখে রোদের রশ্নি এসে পড়তেই তাড়াহুড়ো করে উঠে দেখি বাইরে ঝলমলে রোদ খেলা করছে।
পাশে থাকা মোবাইলের দিকে তাকাতেই চমকে উঠলাম।
সকাল ১১ টা বেজে গেছে।
তারমানে রাজু এলার্ম দেয় নি।রাগান্বিত হয়ে রাজুকে গিয়ে লাথি মেরে ঘুম থেকে তুলে বললাম..
—তোরে না বলেছিলাম,এলার্ম দিয়ে রাখতে।তোর জন্য সব প্লান ভেস্তে গেলো।এখন কি তোর পিঠে চড়ে সবাই গ্রামে যাবো।
এদিকে আমার চিৎকারের শব্দে রাহুল,সোহেলসহ রাফি সবাই ঘুম থেকে জেগে গিয়ে যে য্যামনে পারলো রাজুকে সকালের ব্রেকফাস্টের পরিবর্তে খিস্তি দিতে লাগলো।
রাজু রাগভরে ওরে বালিশের পাশে থাকা ফোনটা হাতে নিতেই দেখলো,ফোনটা চার্জের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।
ফোন বন্ধ হলে আর ওর-ই বা কি দোষ।
সবাইকে থামিয়ে রাহুলকে বললাম।
—আচ্ছা সকালে ছাড়া কি আর ট্রেন যাই না।
রাহুল একটা হতাশাভরা নিঃস্বাস ছেড়ে বললো।
—হ্যাঁ,তবে রাতে যাই।আর দুপুর দুইটার সময় বাস যাই।
—তাহলে ট্রেনের পরিবর্তে বাস করে গেলেই তো হয়।
পাশে থাকা ভদ্র ছেলে 'সোহেল' কথাটা বলে ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে রইলো আমাদের দিকে।
এই ১ম বারের মত একটা সঠিক উপদেশ দিছিস তুই।
তাহলে আর দেরি কেন,চল ফ্রেস হয়ে তাড়াতাড়ি বাসস্টেশন গিয়ে টিকিট বুকিং দেয়।
সবাইকে কথাটা বলে ফ্রেস হতে চলে এলাম।
এক এক করে সবাই ফ্রেস হয়ে হাল্কা কিছু নাস্তা সেরে বার হয়ে পড়লাম।
রাজুর গেটআপ দেখে তো সবাই অবাক।
পুরাই হানি সিং এর ডাবিং করা মাল এইটা।
ব্যাটা নোওয়াখাইল্লা তুই কি গ্রাম ঘুরতে যাচ্ছিস,নাকি গোয়ার বিচে সাঁতার দিতে যাচ্ছিস।
রাজু কিছুটা হেসে দিয়ে বললো..
—আরে ব্যাটা চিজ্ হবে বুঝলি।
চল তো তাড়াতাড়ি,এবার নইতো বাসটাও হারাতে হবে।
পাঁচবন্ধু মিলে একটা গ্রুপ সেল্ফি তুলে হুররে বলে বার হয়ে গেলাম।
একটা সি এন জি করে বাসস্টেশনে এসে থেমে স্বস্থির নিঃস্বাস নিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে সোজা কাউন্টারে গেলাম।
উফপপ বসন্তের এই সময়টাতে হাল্কা শীত থাকলেও দুপুরের দিকটাতে মগজ গলানোর মত রোদ পড়ে।
কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কেটে জিজ্ঞাসা করে নিলাম।
—মামা বাস ছাড়বে কইটার সময়।
কাউন্টারে বসে থাকা লোকটা অমনোযোগিস্বরে বললো..
—২০ মিনিটের ভিতরে ছাইড়া দিবো।
আপনারা সবাই আশপাশে থাকুন।
আশপাশ মানে কাউন্টার থেকে দশ হাতের দুরুত্বে যাবো না।
সবাইকে টেনে টুনে নিয়ে কাউন্টারের পাশে থাকা যাত্রীছাউনিতে বসে অপেক্ষা করছি,কখন যে বাস আসবে।
আর কখন যে রাহুলের গ্রামে পৌঁছাবো।
বাসে না উঠা পর্যন্ত আনন্দটা পুরোপুরি জমছে না।
কেমন যানি লবনহীন তরকারির মত বেস্বাদ মনে হচ্ছে।
বিশ মিনিটের পরিবর্তে চল্লিশ মিনিট পর রাস্তার পাশ ঘেষে বাস এসে থামতেই কাউন্টার মাষ্টার হাক দিয়ে উঠলো।
সিলেটগামী বাস আমাদের স্টেশনে পৌঁছে গেছে।
অতিসিঘ্র বাস চালু করা হবে।
যারা যারা টিকিট কেটেছিলেন,সিট নং অনুযায়ী শান্তিসৃঙ্গলভাবে ভিতরে উঠে যান।
কাউন্টার মাষ্টারের কথা শুনে এক এক করে সবাই ভিতরে গিয়ে টিকিট অনুযায়ী সিট খুঁজে বার করে বসে পড়লাম।
আমার পাশে রাফি,আর আমার পিছনের সিটে রাহুল আর সোহেল।
আর রাজু একা অন্য একটা সিটে।
মনে মনে সবাই একটু খুশিই হলাম,ব্যাটা নোওয়াখাইল্লাটা পাশে বসলে বকবকানির চোটে কানের বারোটা বাজায়ে দিতো।
তারথেকে একা একাই থাকুক।
সকল যাত্রীর উপস্থিতি লক্ষ্য করে ম্যানেজার সাহেব বাস ছাড়ার জন্য নির্দেশ দিতেই সিলেটের উদ্দ্যেশ্যে বাস চলতে শুরু করলো।
জীবনে ১ম বার বন্ধুদের সাথে এত দুরে কোথাও ঘুরতে যাচ্ছি।
কলেজ থেকে গেলে হয়তো এই আনন্দটা হতো না।
বাস ছাড়াতে বিকেলের স্নিগ্ধ হাওয়া গায়ে লাগাতে বেশ শীত ধরে আসতে চাইছে।
তবুও জানালা দিয়ে মুখ বার করে বাইরের সৌন্দর্যকে উপভোগ করছি।
পড়ন্ত বিকেলের ঢলে পড়া সূর্যাস্তের সোনালি আলোটা সত্যি দেখার মত।
আর তার থেকে মনমুগ্ধকর লাগছে,অস্ত যাওয়া সূর্যটার কোমলতা দেখতে।
ঠিক যেন ডিমের কুসুমের মত লাল বৃত্তাকার হয়ে চুপটি করে নিমজ্বিত হওয়ার খেলাতে মেতে উঠছে।
এমন সময় পাশে বসে থাকা 'রাফি' তার প্যান্টের পকেট থেকে ফোনটা বার করে কানে ধরলো।রাফির মুখ দেখেই বুঝতে পারলাম।
তার গ্রালফ্রেন্ড তাকে কল দিয়েছে।
রিসিভ করতেই শুরু হলো।
"ফোনের ওপাশে গ্রালফেন্ড নামক প্রানীটা রাফিকে ইচ্ছে মত ধুচ্ছে।
আর রাফি সেগুলোকে নিরবে হজম করে যাচ্ছে।
ব্যাটা ফান্দে পড়ে গেছে,না পারছে ছেড়ে দিতে,না পারছে টিকিয়ে রাখতে।
অনবরত তার গ্রালফ্রেন্ডের ঝাড়ি খাওয়ার পর কলটা কেটে দিয়ে 'রাফি' মুখটা ভিজে বিড়ালের মত করে তাকিয়ে থেকে বলল..
—দোস্ত অদ্রিকা আমার সাথে ব্রেকআপ করছে।
রাফির ব্রেকআপের কথা শুনে মনে মনে খুশি হলেও শান্তনা দেওয়ার জন্য একটু ইমোশনাল হয়ে বললাম..
—কিহ্ অদ্রিকা তোর সাথে ব্রেকআপ করেছে।এ আবার এমন কি?
এর আগেও তো অনেকবার ব্রেকআপ করে প্যাচাপ করে নিছিস।
—না দোস্ত এবার সত্যি সত্যি ব্রেকআপ করে দিছে।
পিছনের ছিটে থাকা রাহুল,সোহেল আর রাজুকে ডেকে বললাম।
—গায়েস, রাফির ব্রেকআপ হয়ছে।
এখন আমাদের কি করা দরকার?
সবাই কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর একসাথে চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো।
"মাম্মা এবার তো সেই চিল্ হবে।
আপদ বিদায় হইছে।
ওটা মেয়ে ছিলো না,একটা ঝামেলার বক্স ছিলো।
কিন্তু হাজার হলেও তো রাফির গ্রালফ্রেন্ড,তাই রাফিকে কিছুক্ষণ শান্তনা দিলাম।
—দোস্ত আসিফের কয়েকটা গান চালু করে হেডফোন লাগিয়ে শোন।
তারপর জাষ্টিন বেইবার আর সেলিনা গোমস এর গান শুনবি তাহলে দেখবি মনটা একবারে উরাধুরা হয়ে গেছে।
রাফি আমার কথামত হেডফোন লাগিয়ে বিরহের গান গুলি শুনতে লাগলো।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নেমে এসেছে।
জানালার বাইরে এখন শুধু অন্ধ্যকার আর অন্ধ্যকার।
আর শুন্য হাইওয়ে ধরে দুরুন্ত বেগে ছুটে চলছে আমাদের বাসটা।
চলবে...?

4 comments: